আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ

0
1627
শিশু
আলোকচিত্রী : রাসেল রহমান

প্রতিপাদ্য বিষয়ঃ শিশুর জন্য বিশ্ব গড়ি। জন্ম নিবন্ধন প্রতিটি শিশুর মৌলিক অধিকার, ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে শিশুকে রক্ষা করুন। শিশুর প্রতিটি সহিংসতা, শারীরিক শাস্তি রহিতকরন। জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার পর হতে বিশ্বে শিশুদের কল্যাণের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৫২ খ্রিঃ আন্তর্জাতিক শিশু কল্যাণ ইউনিয়ন জনগণের মধ্যে শিশুদের প্রতি দায়িত্ববোধ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী শিশু দিবস পালনের সিন্ধান্ত গ্রহন করে।

বাংলাদেশে শিশু কল্যাণে নিয়োজিত বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে শিশুদের অধিকার সম্পর্কে সমাজের প্রতিটি মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করে পালন করে বিশ্ব শিশু দিবস। অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব শিশু দিবস পালিত হয়। দিবসে আজকের শিশুদের উপযুক্ত গড়ে তোলার জন্য এবং অপেক্ষাকৃত ভালো পরিবেশগড়ে তোলার লক্ষ্যে মনোযোগী হওয়ার জন্য আহবান জানানো হয় সবাইকে। শিশুর নিরাপদ ভবিষ্যৎ, নিষ্ঠুরতাহীন সুন্দর পরিবেশ, উপযুক্ত খাদ্য পুষ্ঠি ও স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা নিশ্চয়তার মাধ্যমে আতœবিশ্বাসী করে গড়ে তোলার জন্য অভিভাবকদের রয়েছে বিশাল দায়িত্ব। এজন্যে তাদের জানা প্রয়োজন শিশু অধিকার সমূহ। জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদে ৫৪ টি ধারা এবং তার মধ্যে ৪১ টি শিশু অধিকার সম্পর্কিত।

শিশু অধিকার সমূহ

বেঁচে থাকার সহজাত অধিকার। বেঁচে থাকা এবং বিকাশের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সর্বাধিক নিশ্চয়তা। পরিচর্যা, সুরক্ষা, সেবা ও সুবিধাদির নিশ্চয়তা। বিকাশ-যোগ্যতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নির্দেশনা ও পরামর্শ। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে জন্ম নিবন্ধীকরণ নামকরণ। জাতীয়তা অর্জন। মাতা-পিতা পরিচয় জানা। মাতা-পিতার হাতে প্রতিপালিত হওয়া।

রাষ্ট্রহীন না হওয়া। ইচ্ছার বিরুদ্ধে মাতা-পিতা থেকে বিচ্ছিন্ন না হওয়া। বিচ্ছিন্ন শিশুর মাতা পিতার সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখা। মাতা পিতার সঙ্গে নিয়মিত ও সরাসরি যোগাযোগ রাখা। দেশত্যাগের অধিকার। নিজ দেশে প্রবেশের অধিকার। অবাধে মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা। স্বাধীনভাবে ভাবপ্রকাশ। চিন্তা, বিবেক ও ধর্মীয়  স্বাধীনতা।

সংঘবদ্ধ হবার এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা। মর্যাদা ও সুনামে বেআইনিভাবে আক্রান্ত না হওয়া। নিজস্ব গোপনীয়তা। অবাধে তথ্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা। আঘাত অথবা অত্যাচার থেকে সুরক্ষা। অবহেলা অথবা অমনোযোগী আচরণ থেকে সুরক্ষা। দুর্ব্যবহার অথবা শোষণ থেকে সুরক্ষা। অশালীনতা থেকে সুরক্ষা। অবহেলা অথবা অমনোযোগী আচরণ থেকে সুরক্ষা। পারিবার বঞ্চিত হলে রাষ্ট্র কর্তৃক বিশেষ সুরক্ষা ও সহায়তা লাভ।

শরনার্থী হলে সকল মানবিক সহায়তার নিশ্চয়তা। পঙ্গু শিশুর মর্যাদা পূর্ণ ভাবে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা। সুস্বাস্থ্য এবং চিকিৎসা লাভের নশ্চয়তা। স্বাস্থ্য পরিচর্যা এবং সেবা প্রাপ্তি নিশ্চয়তা। সামাজিক বীমাসহ সামাজিক নিরাপত্তা পর্যাপ্ত জীবনমান অর্জন। সমান সুযোগের ভিত্তিতে শিক্ষালাভ। বিনা খরচে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা লাভ। ব্যক্তিত্ব মেধা এবং মানসিক ও শারীরিক সমার্তের পরিপূর্ন বিকাশ। নিজস্ব ধর্মের কথা ব্যক্ত করা ও চর্চা করা।

নিজ ভাষা ব্যবহার থেকে বঞ্চিত না হওয়া। নিজ বাষা ব্যবহার থেকে বঞ্চিত না হওয়া। বিশ্রাম ও অবকাশ যাপন। খেলাধুলা ও বিনোদনমূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ। সাংস্কৃতিক জীবন ও সুকুমার শিল্পে অবাধে অংশগ্রহণ। যৌন অপব্যবহার ও যৌন উৎপীড়ন থেকে সুরক্ষা। অপহরণ বিক্রি বা পাচার থেকে সুরক্ষ্ ামুক্ত জীবন থেকে বঞ্চিত না হওয়া।

দ্রুত আইনগত ও অন্যান্য উপযুক্ত সহায়তা লাভ। আইনানুসারে দোষী সাব্যস্ত হওয়া পর্যন্ত নির্দোষ। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ শিশুদের শারীরিক, মানসিক, সাংস্কৃতিক ও সুপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রতিভার বিকাশ সাধনে বিভিন্ন শিশু সংগঠন কাজ করছে।

সমাজসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে শিশু সদন, ছোট মনি নিবাস, দিবাকালীন শিশু যতœ কেন্দ্র, শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও পুর্ণবাসন কেন্দ্র, মুক বধির বিদ্যালয়, অনাথ শিশুদের পুর্ণবাসন কেন্দ্র, অন্ধ বিদ্যালয়, কিশোর সংশোধনী প্রতিষ্ঠান, সমন্বিত অন্ধ শিক্ষা কার্যক্রম, এতিম ও দুস্থ শিশুদের প্রতিষ্টান এবং মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতিষ্ঠান।

লেখক: মিলন মল্লিক

একটি রিপ্লাই দিন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.