আমার সাতরঙা স্বপ্ন- তাহমিদ আরেফিন অর্পণ

0
1464
আমার সাতরঙা স্বপ্ন- তাহমিদ আরেফিন অর্পণ

গভীর রাত। চারদিকে নিস্তব্ধতা, শুধুমাত্র ঝিঁঝিঁ পোকারা গান গেয়ে চলছে নিজেদের মতো। হাতের কাছে ঘড়ি নেই বিধায়  সময়টা বলতে পারছি না। আজ ঘুমিয়ে পড়েছিলাম একটু তারাতারি। হঠাৎ করেই ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার পর, আবছা মনে পড়ছে কি যেন স্বপ্নের সম্মুখীন হয়েছিলাম আমি। সেটি অজানা কারণে বারবার আলোড়ন তুলছে। জীবনের স্বপ্নটা ডেকে যাচ্ছে। যেন স্বপ্নরা কথা বলতে পারছে, তারা বলছে আর আমি নিরব দর্শক। তারা আমায় আমার মাধ্যমেই আমার স্বপ্নগুলোকে স্বরণ করিয়ে দিচ্ছে। যেগুলো পূরণের পথে এগোচ্ছি আমি।

আমার স্বপ্ন বাবাকে ঘিরে। স্বপ্ন আমার মাকে নিয়ে। ভাই-বোন, আত্মীয় স্বজন নিয়ে আমার স্বপ্ন। এই ছোট্ট সোনার দেশ, পড়ালেখা, সাহিত্য ইত্যাদি মিলে আমার স্বপ্ন গঠিত। মূলত আমার স্বপ্ন আমাকে ঘিরেই। কারণ আমি মনে করি আমি মানেই মা-বাবা, ভাই-বোন, দেশ, সাহিত্য ইত্যাদি সকল কিছু। আমি স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি। আর তাই স্বপ্নেই ডুবে রই। স্বপ্নের মাঝেই খুঁজে পাই বাস্তবতা। আমার অনেক অনেক স্বপ্নের মাঝে কিছু স্বপ্ন পুরণ করতে পেরেছি। আর কিছু স্বপ্ন ছুঁতে ছুটছি দিবারাত্র।

জীবনের প্রতিটা বাকেই যেমন রয়েছে গল্প, তেমনি রয়েছে স্বপ্ন। প্রতিটা সেকেন্ড অতিবাহিত হয়, আর সৃষ্টি হয় হাজারো স্বপ্নের। খুবই হাস্যকর হয়ে ওঠে কিছু মহূর্তে, যখন ডাক্তারের শরনাপন্ন হয়ে ডাক্তার, ভালো নাটক/সিনেমা দেখে হিরো, কার্টুন  দেখে কার্টুনিস্ট, হিমু সিরিজের গল্প পড়ে হিমু, প্রকৌশলী দেখে প্রকৌশলী, গল্প বা কবিতা পড়ে উক্ত চরিত্র হওয়ার ইচ্ছে পোষন করি। জীবনের পেছন ছুটতে ছুটতে লক্ষ্য করেছি অতিবাহিত করা সুখ-দুঃখ, সংগ্রাম, ডাস্টবিনে পড়ে থাকা খাবারগুলো হাতাহাতি করা পথশিশুদের, রোহিঙ্গাদের, উচ্চবিলাসীদের। তাদের অনেকেরই জীবনে স্বপ্ন দেখা পাপ। আবার অনেকেই স্বপ্নবিলাসী। আমারও স্বপ্ন ছিল, আছে আর থাকবেও।

আমি দৃঢ় প্রত্যয়ী স্বপ্ন পুরনের লক্ষে। তাই সমাজের বাবাদের কাছে শিখি, মায়েদের কাছে শিখি। আর আমার বাবা মায়ের ইচ্ছে, স্বপ্নই আমার স্বপ্ন। আমার দৃঢ় প্রত্যয়। ড.এ পি জে আব্দুল কালাম স্যার বলেছিলেন, স্বপ্ন সেটি নয় যেটা মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখে, স্বপ্ন সেটাই যেটা পুরণের প্রত্যাশা, মানুষকে ঘুমাতে দেয় না। আমারও একটি স্বপ্ন আছে, যেটি পুরণের প্রত্যাশা আমায় জাগিয়ে রাখে। আমায় স্বপ্ন দেখায় উদ্যমি হওয়ার। কম্পিউটার সায়েন্স। এরপর গুগল/ফেসবুকে চাকরি। যেটি আমার স্বপ্ন-সাধনা। আমি এখন নবম শ্রেনীতে অধ্যায়নরত, আর যখন অনেক ছোট ছিলাম তখন ভাঙা ভাঙ্গা কণ্ঠে বলেছিলাম, আমি বলো (বড়) হয়ে এত্তো বল (বড়) ইন্দিনিয়াল (ইঞ্জিনিয়ার) হবো। আর পেতাম বাবা মায়ের দেয়া আলতো চুমু। হয়তো সেই থেকেই দৃঢ় প্রত্যয়ী। স্বপ্নেরা উঁকি দেয় আমার মাঝে আর আমি তাকাই নিজের দিকে। কারণ, আমাকে পারতেই হবে। হাজারো কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে সময় কেটে গিয়েছে বুঝতেই পারিনি। মসজিদ হতে ফজরের আজানের সুমধুর ধ্বনি ভেসে আসছে। নামাজ পড়ব। উঠে পড়ি বিছানা হতে আর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই স্বপ্ন পুরণের।

 

 

 

 তাহমিদ আরেফিন অর্পণ

নবম শ্রেণি

পাটেশ্বরী বরকতীয়া বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়

একটি রিপ্লাই দিন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.