একদিন মেঘনা-পাড়ের ছেলে আবু তালিবের জালে ধরা পড়ে একটি জাটকা। বাচ্চা-ইলিশকে জাটকা বলে। চকচকে রূপালি রঙের জাটকা পেয়ে আবু তালিব তো খুশিতে আটখানা। ওর সাথীদের বলে, আমি এটাকে পুষব। বাড়িতে নিয়ে কলসিতে রেখে দেব।
রবি বলে, ওই মাছ তো কলসিতে বাঁচবে না। তুই বাড়ি নেয়ার আগেই ওটা মরে যাবে। তুই কি জানিস না যে ইলিশমাছ ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মরে যায়। আর এটা তো পিচ্চি! তাহলে এটাকে আমি ছেড়ে দিই, বলেই আবু তালিব একছুটে নদীর ধারে গিয়ে মাছটাকে পানিতে ছেড়ে দেয়। পানিতে পড়েই জাটকা লেজ ঝাপটে পানিতে আলোড়ন তুলে বলে, তোমাকে ধন্যবাদ আবু তালিব। আজ থেকে তুমি আমার বন্ধু। তুমি যদি চাও তাহলে তোমাকে আমি সাতসমুদ্র তেরোনদী ঘুরিয়ে দেখাব। আমি হলাম মেয়েজাটকা। আমার নাম মায়াবতী।
মায়াবতীর কথা শুনে আবু তালিব তো মহাখুশি। লাফিয়ে-ঝাঁপিয়ে খুশি প্রকাশ করে বলে, মায়াবতী আমি তোমার সঙ্গে তোমার দেশে বেড়াতে যাব। ইলিশ আমার খুব প্রিয় মাছ। ঠিক শুনেছ। আমি তোমাকে একদিনে অনেক জায়গায় ঘোরাতে পারব। এখন তো আমরা মেঘনা নদীতে। এ ছাড়া পদ্মা আর যমুনা হলো আমাদের বিচরণ ক্ষেত্র। আমরা ঘুরে বেড়াই সমুদ্রে, মোহনায় এবং নদীতে। শুনে অবাক হবে যে পারস্য উপসাগর থেকে শুরু করে লোহিতসাগর, আরবসাগর, বঙ্গোপসাগর, ভিয়েতনাম ও চীনসাগর পর্যন্ত আমাদের আবাসস্থল। বাংলাদেশের উপকূলের নদী গুলোতেও আমরা থাকি। এ ছাড়া শাতিলআরব, ভারতের পুব ও পশ্চিম অঞ্চলের নদীগুলো, পাকিস্তানের সিন্ধুনদ, ইরান ও ইরাকের ইউফ্রেটিস ও টাইগ্রিস নদীতে আমরা বসবাস করি।
কী মজা তোমাদের মায়াবতী। এ জন্যই তুমি সাতসমুদ্র তেরোনদীর কথা বলেছ। ঠিক বলেছ। তবে আমি আর একটি কারণে ভীষণ খুশি।
কী কারণ?
কারণটি হলো মেয়ে-ইলিশ পুরুষ-ইলিশের চেয়ে আকারে বড় হয়।