করোনাকালীন ব্যাংকার শামীম আহমেদ এর ত্রাণ বিতরণকার্যক্রম

0
319
শামীম আহমেদ

পাগলের বন্ধু নামে খ্যাত ব্যাংকার শামীম আহমেদ দেশের এই ক্রান্তিকালে ঘরে বসে থাকেননি। কখনো পায়ে হেঁটে, কখনো কাঁধে করে, কখনো ভ্যানে করে, কখনো রিক্সায় করে, কখনো বাইকে করে এক এলাকা থেকে আরেক এলাকাতে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে ছুটে বেড়িয়েছেন।

বৈশাখী বোনাসের টাকা দিয়ে জন ৩০ সিংগেল ও অসহায় বিধবা মায়েদের মাঝে খাদ্য বিতরণ করেছেন। ঈদ বোনাসের টাকা থেকে ১০ টি শিশুর দুধ বাবদ বিকাশের মাধ্যমে ২ হাজার টাকা করে পাঠিয়েছেন। পংগু, নও মুসলিম কিছু পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন।লকডাউন বাড়িতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ২ টা পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। রাস্তার কুকুরগুলোকে খাবার দিয়েছেন। প্রায় ৪০০ পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ ও বিকাশের মাধ্যমে নগদ অর্থ পাঠিয়েছেন। তবে ওনার এই কাজে ওনার কয়েকজন ফেসবুক বন্ধু সহযোগীতা করেছেন। তুরাগ থানা ও সাভারের কয়েকটি পরিবারের মাঝেও খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। অসহায় মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে নিজ বাসায় পরিবার থেকে আলাদা থেকেছেন।

১০০ পরিবারের মাঝে কোরবানীর গোশত বিতরণ
আলহামদুলিল্লাহ। অবশেষে ঈদের ৩য় দিনে বিতরণ করা হলো কোরবানীর গোশত। কোরবানীর ঈদের ৩য় দিন ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তে ১০০ পরিবারের মাঝে গোশত বিতরণ করেছেন ব্যাংকার শামীম আহমেদ ও তাঁর টিম। কোরবানীর এই গরুটা আমাকে দান করেছিলেন ‘শিকর এগ্রো ফার্ম এর স্বত্তাধিকার কাজী সুফিয়ান । ব্রাহামা জাতের এই গরুটিতে প্রায় ৩৮০ কেজি গোশত হয়েছিলো (হাড় ছাড়া)। পরিবার প্রতি ৩ কেজি করে ১০০ প্যাকেট করা হয়েছিলো। করোনার কারনে নিম্নআয়ের মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও আজ অসহায়। তাই তাঁদের মুখে একটা হাসি ফুটানোর জন্য আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। আমার এই টিমে কাজ করেছেন করেছেন আলেয়া বেগম আলো, হাওয়া ও তার স্বামী এবং হাসান।

শিশুদের সহযোগিতা

ঈদের দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পথশিশুদের মাঝে খাবার ও ঈদের নতুন পোশাক বিতরণ করেছেন ব্যাংকার শামীম আহমেদ।

৫০ টি পরিবারে ঈদের খাদ্য সামগ্রী প্রদান
৫০ টি পরিবারের জন্য ঈদের খাদ্য সামগ্রী প্রদান করেন শামীম আহমেদ। এসব পরিবারে চাল, ডাল, আলু, আটা, পেয়াজ, তেল, সেমাই, মুরগী ইত্যাদি বিতরণ করা হয়।

ঢাকার আদাবরে ২৪ টি পরিবার,ঢাকার ডেমরাতে ২০ টি পরিবার এবং বনশ্রীতে ০৬ টি পরিবার। খাদ্য সামগ্রীগুলো স্পনসর করেছেনে শামীম আহমেদের লন্ডনের বন্ধু আমেনা বেগম এবং অষ্ট্রিয়ার একজন প্রবাসী ফেসবুক বন্ধু (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)।

শামমী আহমেদ বলেন :
একদিন ৩ জন সিঙ্গেল মা আমার বাসার সামনে এসে হাজির। বয়স আনুমানিক ২০-৩০ বছর হবে। আমি তাঁদের পারিবারিক অবস্থা ও সত্যতা যাচাই করার জন্য ২ জনের সাথে হেঁটে হেঁটে শনিরবিলে চলে যাই। ওনাদের সাথে সাথে চিপা একটা সিঁড়ি দিয়ে দুই তলা একটা বাড়িতে উঠি। দ্বিতীয় তলার মাঝ দিয়ে একটা করিডোর। দুই পাশে ছোট ছোট রুম। এই বাড়িটাতে থাকে ফোনে যোগাযোগ করা দুইজন সিঙ্গেল মা। একজনের ২ টা বাচ্চা, স্বামী ছেড়ে চলে গেছে এবং অন্যত্র বিয়ে করেছে। মানুষের বাড়ি বাড়িতে কাজ করে যে আয় হয় তা দিয়ে দুই বাচ্চার সংসার কোনোরকম চলে। বাসা ভাড়া ও আনুসাংগিক খরচ করে ঘরে খাবারের তেমন কিছু নাই। সরকারিভাবে কোনো প্রকার এাণ পায়নি। কারো কাছে হাত পেতে কিছু চাইতেও পারছে না। সবকিছু শুনার পর ওনাদের দুইজনকে আমি একটা দোকানে নিয়ে আসি। সেই দোকান থেকে চাল, ডাল, আটা, আলু, তেল,লবন, পেয়াজ কিনে ওনাদের দুইজনের হাতে তুলে দেই। আরেকটা এাণের প্যাকেট (প্রায় ১৩ কেজি) আমি আমার কাঁধে করে শনিরবিল থেকে আদাবর ১৬ নাম্বারে আরেকজন সিঙ্গেল মায়ের জন্য নিয়ে আসি এবং ওনার হাতে তোলে দেই। ওনারও দুই সন্তান এবং জীবনের ইতিহাস প্রায় একরকম।

ইচ্ছে শক্তি, কিছু সময়, কিছু শ্রম ও কিছু অর্থ বয়ে আনতে পারে অনেকগুলো মানুষের মুখের হাসি ও অনন্দ। পেয়ে যাবেন অসহায় মানুষগুলো আত্মা থেকে দোয়া ও ভালোবাসা।

তাই আসুন দেশের এই দূর্যোগময় সময়ে এই সকল অসহায় সিঙ্গেল মাদার ও বিধবা মাসহ দেশের অন্যান্য অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াই।

একটি রিপ্লাই দিন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.