যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ২৬ নভেম্বর

1
90
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ২৬ নভেম্বর

যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ২৬ নভেম্বর। যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের আর মাত্র বাকি পাঁচদিন। এবারের নির্বাচনে আগের সেই আমেজ নেই। নেই বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের মহাজোট প্যানেল এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের চির প্রতিদনদ্বিতা। এবারের নির্বাচনে যেন নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ। কে কার পক্ষে মাঠে নামবেন তা নিয়ে দ্বিধা দ্বন্ধে ভুগছেন সমর্থকরা। এতে করে প্রতি নির্বাচনে ভোটের মাঠে দাপিয়ে বেড়ানো
নেতাদের অনেকে প্রকাশ্যে নির্বাচনের মাঠে নামতে পারছেন না। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের মধ্যে এখন চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

অন্যদিকে, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ভেঙে চৌচির। তারা এবার সদস্যের পাঁচ পদে প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও এনিয়ে ভোটারদের মধ্যে নানা গুঞ্জন। অন্য যেসব সংগঠন আছে তারাও এবার নির্বাচনে নেই। ভোটারদের দাবি, সমিতির ইতিহাসে এবার প্রথম এ ধরনের নির্বাচন হতে যাচ্ছে। অন্যান্য বছরের মতো উৎসবের ছিটেফোটাও নেই এবারের নির্বাচনে।

সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদে সভাপতি পদ নিয়ে কাড়াকাড়ির একপর্যায়ে ভেঙে দুই ভাগ হয়ে গেছে। প্যানেল দেওয়া হয়েছে দু’টি। যার একটির নেতৃত্বে রয়েছেন বর্তমান সভাপতি শরীফ নূর মোহাম্মাদ আলী রেজা।
আরেকটির নেতৃত্বে সাবেক সভাপতি এম.ইদ্রিস আলী। দুই প্যানেল সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমান মুকুলকে দাবি করছেন। যদিও তিনি রয়েছেন সভাপতি প্রার্থী ইদ্রিসের সাথে। দুই প্যানেলই পৃথক শোডাউন দিচ্ছে। এতে করে ভোটাররা বিপাকে পড়ছেন।

সংগঠনের সদস্যরা বলছেন, ক্ষমতার লোভের কারণে আজ সংগঠনটিতে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন হাতেগোনা কয়েকজন নেতা। যারা নিজেদের স্বার্থের জন্য সংগঠনকে শেষ করছেন।

অন্যদিকে, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্যরা জানান, এবার প্রার্থী দেওয়ায় তাদের দুস্কর হয়ে পড়ে। শেষমেষ ১৩ পদের বিপরীতে আটজনের মনোনয়নপত্র জমা দেন। তার মধ্যে সহসভাপতি পদের দু’ প্রার্থী হলেন, জামায়াত সমর্থিত ল’ ইয়ার্স কাউন্সিলের। এছাড়া, সদস্যের পাঁচটি পদে প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছেন এই প্যানেলের নেতারা। তাদের সভাপতি পদে শক্তিশালী প্রার্থী থাকলেও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী একেবারেই নতুন। এছাড়াও অন্য পদে যেসব
প্রার্থী দিয়েছেন তাদের অধিকাংশই নতুন এবং নির্বাচনের অভিজ্ঞতা নেই। ফলে, এই প্যানেলের প্রার্থীদের জয়লাভ নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন অধিকাংশ সদস্য। এদিকে, ফোরামের বহিষ্কৃত সাবেক সভাপতি আবু মোর্তজা ছোট সাধারণ
সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন।

আরও পড়ুন: কালের পরিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গরুর হাল

সদস্যরা বলেন, বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে সংগঠনের জন্য ব্যাপক ভূমিকা পালন করলেও ফোরামের কয়েক নেতার ষড়যন্ত্রে ছোটকে বহিষ্কার করা হয়। তার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আসছে,আসবে বলে আশ্বাস দিলেও তাকে সংগঠনে ফেরানো হয়নি। তিনি ফোরামে না থাকলেও বড় একটি অংশ ছোটর পক্ষ নিয়েছেন। মহাজোটের সাথে থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া বামপন্থী সংগঠন গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি এবারের নির্বাচনে প্রার্থী দেয়নি। তারা মহাজোটের সাথে বিভিন্ন সময় থাকলেও এবার তারা কোনো প্যানেলের সাথেই নেই। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলু। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে তেমন পরিবেশ না থাকায় তারা প্রার্থী দেননি।
মহাজোটের মধ্যেই দ্বন্দ্ব আছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। মহাজোটে থাকা আরেক সংগঠন আইনজীবী ফেডারেশন দুই ভাগে বিভক্ত। সভাপতি রয়েছেন রেজা প্যানেলে। সাধারণ সম্পাদক রয়েছেন ইদ্রিস প্যানেলে। এক কথায় এবারের নির্বাচন নিয়ে হযবরল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

ভোটাররা উৎসবের আমেজ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন অনেকে। আগামী ২৬ নভেম্বর যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন-২৩ হবে। এদিন ১০ টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সমিতির ১ নম্বর ভবন মিলনায়তনে হবে নির্বাচন। এবার সমিতির ৫০৫ সদস্য তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের নেতা নির্বাচিত করবেন।

1 মন্তব্য

একটি রিপ্লাই দিন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.