আনন্দ উল্লাসের সাথে আয়োজিত হলো মজার ইশকুল আনন্দ উৎসব। ঢাকা ইস্কাটন লেডিস ক্লাবে গত ১৯ অক্টোবর ৪ শতাধিক শিশুর সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে তারা। তাদেরকে দুপুরের খাবার দেয়া হয়। মজার ইশকুলের শিশুরা নাচ, গান ও আবৃত্তির মাধ্যমে আনন্দে মাতিয়ে রাখে সবাইকে। থাকে সিসিমপুরের হালুম টুকটুকিরাও।
‘মজার ইশকুলের’ ওই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন যাত্রাবাড়ী-ডেমরা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার ইফতেখাইরুল ইসলাম।
অদম্য বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন কিছু উদ্যমি তরুণের স্বপ্ন নিয়ে পথ চলা:
যে তরুণরা চায় সমাজে একজনও পথশিশু থাকবে না। খালিপেটে শিক্ষা অর্জন করার বিষয়টা কাল্পনিক। তাই তাদের লেখাপড়ার পাশাপাশি খাবার সরবরাহ করাও তাদের উদ্দেশ্য। মজার ইশকুল নামে তারা তাদের কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করছে।
মজার ইশকুল কাজ করছে ৪টি ধাপে:
০১. খোলা আকাশের নিচে পরিচালিত মজার ইশকুল।
০২. রাজধানী ঢাকার ভিতর স্থায়ী মজার ইশকুল।
০৩. রাজধানী ঢাকার বাহিরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে মজার ইশকুল।
০৪. অদম্য বাংলাদেশ চিল্ড্রেন ভিলেজ।
ফেইজগুলোর বিবরণ:
ফেইজ-১: যে শিশুরা নিয়মিত মজার ইশকুলে আসে তাদের কয়েকটা ক্যাটাগরি রয়েছে। এক, বাবা অথবা মা অথবা আত্মীয়র কাছে বড় হচ্ছে ঢাকাতেই থাকে তারা ফেইজ-২ তে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে, আরেক দল আছে যাদের বাবা অথবা মা অথবা বাবা মা উভয়েই গ্রামে থাকে কিন্তু তার বা তাদের সন্তান দীর্ঘদিন ধরে ঢাকাতে থাকে। ফেইজ-৩: যাদের বাবা অথবা মা কেউ নেই, ঢাকাতে থাকাতে থাকার কেউ নেই সে কোথায় যাবে? তার জন্য ফেইজ-৪ অর্থ্যাৎ অদম্য বাংলাদেশ চিল্ড্রেন ভিলেজ। প্রতি ১০জন পথশিশুর সাথে একজন মা সহ পারিবারিক পরিবেশে বেড়ে উঠার স্থান হবে এই ভিলেজ যেখানে থাকবে সকল সুবিধা এবং তাদের পরিকল্পনা এবং ইচ্ছা ২০১৮ সালেই ছোট করে হলেও অন্তত ৫০জন শিশুর জন্য হলেও ভিলেজ চালু করা।
ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি স্বাবলম্বী হওয়া নিশ্চিত করতে পছন্দনীয় যে কোন একটি বিষয়ে ট্রেড কোর্স বা ভোকেশনাল বাস্তবিক শিক্ষা গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হবে যাতে অল্প হলেও নির্দিষ্ট সময় পরে সে পরিবার বা নিজের জন্য আয়ের পথ খুঁজে পাবে।
সাধারণ পাঠদানের বাইরে নানাভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয় পথশিশুদের এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘মজার ইশকুলে।’

মজার ইশকুল মানিক নগর:
মোট শ্রেণি ৪টি, মোট শিক্ষার্থী ৬০জন, মোট শিক্ষক ৬জন, স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষক ১০জন।
মজার ইশকুল আগারগাঁও:
শ্রেণিঃ ৪টি, শিক্ষার্থীঃ ৬০জন, শিক্ষকঃ ৬জন। স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষক ১০জন।
মজার ইশকুল শাহবাগ ও মজার ইশকুল সদরঘাট:
শরীর চর্চা, জাতীয় সংগীত, শপথ পাঠ, সচেতনতা, স্বাক্ষর জ্ঞান, স্টেপ বুক, রঙ্গিন ছবি আঁকা, খাবার বিতরণ।
মজার ইশকুল কমলাপুর:
গড় নিয়মিত শিক্ষার্থী ৮০-১০০, সমন্বয়কারী ০১জন, নিয়মিত স্বেচ্ছাসেবীঃ ১০জন।
ক্লাস কার্যক্রমঃ শরীর চর্চা, জাতীয় সংগীত, শপথ পাঠ, সচেতনতা, স্বাক্ষর জ্ঞান, স্টেপ বুক, রঙ্গিন ছবি আঁকা, খাবার বিতরণ।
মজার ইশকুল বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করে। তার মধ্যে- পিঠা উৎসব, ক্রীড়া উৎসব, ফল উৎসব, ঈদ উৎসব, আনন্দ উৎসব, শীত উৎসব ইত্যাদি।
১৯ অক্টোবর ২০১৭, ৪ শতাধিক শিশুকে নিয়ে করা আনন্দ উৎসবের দিন আমাদের কচিপাতা ম্যাগজিনের সম্পাদক আলেয়া বেগম উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেছেন। প্রতিবেদক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তাসলিম হাসান রানা ও ইয়াসির আরাফাত। ইভেন্টটির ছবি তুলেছেন কচিপাতা ম্যাগাজিনের আলোকচিত্র সম্পাদক মহসিন আহমেদ।